ময়মনসিংহ ১১:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাককানইবি মেডিকেল সেন্টার

১৭ বছরেও চালু হয়নি ব্যাথার দানের নাইট শিফট

ময়মনসিংহ: চরম উদাসীনতা আর খামখেয়ালিপনায় চলছে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টার “ব্যাথার দান”। ডাক্তার স্বল্পতা, ঔষধ সংকট, ছুটির দিনে মেডিকেল সেন্টার বন্ধ থাকা ও ২৪ ঘন্টা মেডিকেল খোলা না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এছাড়াও সর্বক্ষণিক রোগী পরিবহনের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না, ফলে রোগীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে গুরুতর রোগে আক্রান্ত রোগীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে বেগ পেতে হচ্ছে রোগীদের।

সরেজমিনে জানা যায়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪টি বিভাগ শিক্ষার্থী সংখ্যা আট হাজারের অধিক এবং শিক্ষক দুইশতাধিক, রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিপুল এই জনবলের চিকিৎসা সেবা প্রদান খুবই জরুরী হলেও নানা কারণে প্রায়ই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় রোগীদের।

এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী অনন্যা রহমান সৃষ্টি বলেন, “বাড়ী থেকে অনেক দূরে এসে পড়াশোনা করছি। যেকোনো সময় যেকোনো শিক্ষার্থীর অসুষ্থ হওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্ত প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবারহে তারা সবসময়েই অবহেলা করে এমনকি রাতের বেলা মেডিকেল সেন্টারে সকল চিকিৎসা বন্ধ থাকে। চারটি হলে রোজই বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ হচ্ছে।  রাতের বেলা কেউ অসুস্থ হলে আমাদের ত্রিশাল স্বাস্থ কমপ্লেক্সে যাওয়া লাগে।  প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং রাতের বেলা আমাদের সঠিক চিকিৎসা সেবা দিলে আমাদের ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে যাবে।”

আইন ও বিচার বিভাগের নাঈম আজাদ (২০২২-২৩ সেশন) বলেন, “নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টার হলো ব্যাথার দান, সন্ধা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে অন্ধকার নেমে আসে এই ব্যাথার দানে। যার ভুক্তভোগী আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ছুটে যেতে হয় ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা ময়মনসিংহ শহরে। প্রতিদিন সন্ধার পরে অসংখ্য শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে আসে কিন্তু ফিরে যেতে হয় খালি হাতেই।সন্ধার পরপরই গেইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইমারজেন্সি কোন প্রয়োজনে ছুটতে হয় দিগ্বিদিক।”

 মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবুল খায়ের মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা ১ বছরে ১০ লক্ষ টাকা বাজেট পাই। এই বাজেটে আমাদের পক্ষে সব ঔষধ দেওয়া সম্ভব না। ডাক্তার আর জনবল কম থাকায় আমরা নাইট শিফট চালু করতে পাচ্ছিনা। আমারা রেজিস্ট্রার দপ্তরে আমাদের ডাক্তার চাহিদা কাগজ জমা দিয়েছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার হল প্রথামিক চিকিৎসা কেন্দ্র। এই খানে সব ঔষুধ পাওয়া যাবে বিষয় টা এমন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে পর্যাপ্ত স্টাফের ব্যবস্থা করতে পারলে আমাদের যে নিয়মিত সিডিউল রয়েছে সেটিকে বৃদ্ধি করা যায় কি না চিন্তা করব। স্টাফ নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।”

এম্বুলেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দিয়েই আরও এম্বুল্যান্স কেনার কথা ভাবছি।”

বিষয়:

জাককানইবি মেডিকেল সেন্টার

১৭ বছরেও চালু হয়নি ব্যাথার দানের নাইট শিফট

প্রকাশের সময়: ১১:৪২:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

ময়মনসিংহ: চরম উদাসীনতা আর খামখেয়ালিপনায় চলছে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টার “ব্যাথার দান”। ডাক্তার স্বল্পতা, ঔষধ সংকট, ছুটির দিনে মেডিকেল সেন্টার বন্ধ থাকা ও ২৪ ঘন্টা মেডিকেল খোলা না থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এছাড়াও সর্বক্ষণিক রোগী পরিবহনের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সঠিক সময়ে পাওয়া যায় না, ফলে রোগীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা ও রোগ নির্ণয়ের জন্য নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে গুরুতর রোগে আক্রান্ত রোগীদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে বেগ পেতে হচ্ছে রোগীদের।

সরেজমিনে জানা যায়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৪টি বিভাগ শিক্ষার্থী সংখ্যা আট হাজারের অধিক এবং শিক্ষক দুইশতাধিক, রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিপুল এই জনবলের চিকিৎসা সেবা প্রদান খুবই জরুরী হলেও নানা কারণে প্রায়ই চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় রোগীদের।

এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী অনন্যা রহমান সৃষ্টি বলেন, “বাড়ী থেকে অনেক দূরে এসে পড়াশোনা করছি। যেকোনো সময় যেকোনো শিক্ষার্থীর অসুষ্থ হওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্ত প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবারহে তারা সবসময়েই অবহেলা করে এমনকি রাতের বেলা মেডিকেল সেন্টারে সকল চিকিৎসা বন্ধ থাকে। চারটি হলে রোজই বহু শিক্ষার্থী অসুস্থ হচ্ছে।  রাতের বেলা কেউ অসুস্থ হলে আমাদের ত্রিশাল স্বাস্থ কমপ্লেক্সে যাওয়া লাগে।  প্রয়োজনীয় ঔষধ এবং রাতের বেলা আমাদের সঠিক চিকিৎসা সেবা দিলে আমাদের ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে যাবে।”

আইন ও বিচার বিভাগের নাঈম আজাদ (২০২২-২৩ সেশন) বলেন, “নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মেডিকেল সেন্টার হলো ব্যাথার দান, সন্ধা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে অন্ধকার নেমে আসে এই ব্যাথার দানে। যার ভুক্তভোগী আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজন হলে ছুটে যেতে হয় ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা ময়মনসিংহ শহরে। প্রতিদিন সন্ধার পরে অসংখ্য শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিতে আসে কিন্তু ফিরে যেতে হয় খালি হাতেই।সন্ধার পরপরই গেইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইমারজেন্সি কোন প্রয়োজনে ছুটতে হয় দিগ্বিদিক।”

 মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবুল খায়ের মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা ১ বছরে ১০ লক্ষ টাকা বাজেট পাই। এই বাজেটে আমাদের পক্ষে সব ঔষধ দেওয়া সম্ভব না। ডাক্তার আর জনবল কম থাকায় আমরা নাইট শিফট চালু করতে পাচ্ছিনা। আমারা রেজিস্ট্রার দপ্তরে আমাদের ডাক্তার চাহিদা কাগজ জমা দিয়েছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার হল প্রথামিক চিকিৎসা কেন্দ্র। এই খানে সব ঔষুধ পাওয়া যাবে বিষয় টা এমন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে পর্যাপ্ত স্টাফের ব্যবস্থা করতে পারলে আমাদের যে নিয়মিত সিডিউল রয়েছে সেটিকে বৃদ্ধি করা যায় কি না চিন্তা করব। স্টাফ নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।”

এম্বুলেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দিয়েই আরও এম্বুল্যান্স কেনার কথা ভাবছি।”