ময়মনসিংহ: কয়েকদিনের অতিরিক্ত ঠান্ডা ও কুয়াশায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় আলু চাষীদের মাথায় হাত। ঠান্ডা ও কুয়াশায় আলু নাবী ধ্বস বা লেইট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হয়ে সব আলুগাছ মরে গেছে। স্বপ্নের আলু চাষি কৃষকদের চোখে এখন কষ্টের পানি।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, আলু সাধারণত নভেম্বর মাসে লাগাতে হয়। আর লাগানোর ৮০ দিনের মধ্যে আলু উত্তোলণ করা যায়। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে ৯০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে। কিন্তু টানা ঠান্ডা ও কুয়াশায় ৭০ ভাগ কৃষকের আলু ক্ষেত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে গেছে। বিশেষ করে কাকরকান্দী, রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া, মরিচপুরান, বাঘবেড় ও যোগানীয়া ইউনিয়নের কৃষকদের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
‘ফাইটোপথোরা ইনফেসটানস’ নামক ছত্রাকের আক্রমণে আলুর লেইট ব্লাইট বা নাবী ধসা রোগ হয়ে থাকে। দেশে প্রতিবছর এ রোগের কারণে আলু উৎপাদনে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঠান্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এবং দীর্ঘ সময় শিশির থাকলে এ ক্ষত দ্রুত বড় হয়ে গাঢ় বাদামি বা কালো দাগে পরিণত হয়। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে নতুন সংক্রমণ শুরু হয় এবং কয়েকটি দাগ একত্রিত হয়ে গোটা পাতা পুড়ে যায়। গোটা গাছ কালো হয়ে ঢলে পড়ে এবং ২-৩ দিনের মধ্যে খেতের সব গাছ মরে যেতে থাকে। গাছের উপরের অংশ আক্রান্ত হওয়ায় মাটির নিচে আলুও আক্রান্ত হয়।
কাকরকান্দী ইউনিয়নের বিন্নিবাড়ী গ্রামের মো.নজরুল ইসলাম (৫০) বলেন, ‘এবার আমি ৫০ শতাংশ জমিতে আলুর বীজ লাগিয়েছিলাম। আলু গাছও ভালো হয়েছিলো। কিন্ত হঠাৎ কইরা দেহি সব গাছ মইরা যাইতেছে। সেক্টরে জানাইলাম, ওষধ দেওয়া হলো। এরপরও দুই দিনের মধ্যে সব আলুগাছ মইরা গেছে। লাভের আশায় লগ্নি করে এবং আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার এনে আলু চাষ করছিলাম, কিন্তু ভাইরাসে আমার সব কিছু শেষ করে দিল।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন ও মওদুদ আহমেদ বলেন, আলুর এ রোগে চলতি বছর সারাদেশ কমবেশি আক্রান্ত হয়েছে। এই এলাকায় যে সমস্ত কৃষক দেশি জাতের আলু রোপণ করেছেস সেই সমস্ত খেতে আক্রান্ত বেশি হয়েছে। আমাদের কাছে খবর আসা মাত্রই সেক্টরের মাধ্যমে কৃষকদের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি। এরপরও এ রোগে আক্রান্ত আলু ক্ষেত একদম মরে গেছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।