ময়মনসিংহ ১০:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেপালে বন্যার্তদের সাহায্যে ভারতীয় ত্রাণের ২য় চালান  

এই চালানে ২১.৫ টন প্রয়োজনীয় সামগ্রী নেপালগুঞ্জে পাঠানো হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে হাইজিন সামগ্রী, ওষুধ, মশারি, লাইফ জ্যাকেট, ঘুমানোর ম্যাট, খাদ্যসামগ্রী, গামবুট, একটি ফোলানো রাবারের নৌকা এবং একটি মোটর। কাঠমাণ্ডুর ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হবে যাতে চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা যায়।

গত মাসের শেষের দিকে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে নেপালে ২৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকা এখনও জলে ডুবে আছে এবং হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে, যারা দ্রুত পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা প্রয়োজন।

ভারতীয় দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “নেপালের সরকারের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে, যাতে বন্যার শিকারদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দ্রুত পৌঁছানো যায়। আরও ত্রাণ সামগ্রী শীঘ্রই পৌঁছাবে, যা নেপালের প্রতি আমাদের অব্যাহত সংহতির প্রতীক।”

দ্বিতীয় চালানের বিস্তারিত

আজকের চালানটি ভারতের পাঠানো দ্বিতীয় ত্রাণ সহায়তা, যা এই সপ্তাহের শুরুর একটি প্রথম চালানের পর পাঠানো হয়েছে। এই চালানে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী রয়েছে, যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী চাহিদা মেটানোর জন্য নকশা করা হয়েছে:

হাইজিন সামগ্রী: যেমন সাবান, জীবাণুনাশক, ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত সামগ্রী, যাতে বন্যা-পরবর্তী রোগের বিস্তার রোধ করা যায়।

ওষুধ: প্রয়োজনীয় ওষুধ, যা আঘাত ও পানিবাহিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।

মশারি ও লাইফ জ্যাকেট: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পানিবাহিত দুর্ঘটনা ও মশার কামড় থেকে রক্ষা করার জন্য।

ঘুমানোর ম্যাট ও খাদ্যসামগ্রী: গৃহহারা মানুষদের তাৎক্ষণিক আরাম ও খাদ্যের জোগান দিতে।

ফোলানো রাবারের নৌকা ও মোটর: উদ্ধার কাজ ও দুর্গম এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে ব্যবহৃত হবে।

ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, এই ত্রাণ সামগ্রী বন্যাদুর্গতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে নির্বাচিত হয়েছে, যাতে তাৎক্ষণিক বেঁচে থাকার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের কাজও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়।

এর আগে সপ্তাহের শুরুতে, ভারতীয় দূতাবাস ১১.৮৫ মিলিয়ন রুপি মূল্যের প্রথম ত্রাণ সামগ্রী ব্যাংকের প্রধান জেলা কর্মকর্তা খগেন্দ্র প্রসাদ রিজালের কাছে হস্তান্তর করে। সেই চালানে ৪.২ টন ত্রাণ সামগ্রী ছিল, যার মধ্যে ছিল ত্রিপল, ঘুমানোর ব্যাগ, কম্বল, ক্লোরিন ট্যাবলেট, ও বোতলজাত পানি।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানিয়েছে, “আমরা নেপালের কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে সব প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা যায়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও ত্রাণ সামগ্রী যেমন স্বাস্থ্যবিধি ও ওষুধ পাঠানো হবে, যাতে নেপালের পুনরুদ্ধার কাজকে আরও সহায়তা করা যায়।”

ভারত সরকার নেপালের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো যায়। ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা নেপালের এই কঠিন সময়ে অব্যাহত সমর্থন ও সম্পদ দিয়ে পাশে থাকবে।

ভারত ও নেপালের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যা সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক বন্ধনে আবদ্ধ। নেপালে ত্রাণ পাঠানোর মাধ্যমে ভারত এই সম্পর্কের গভীরতা প্রকাশ করেছে, যা দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহানুভূতির প্রতীক।

ভারতের এই সহায়তা আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং ত্রাণ সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করে তুলবে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

বিষয়:

নেপালে বন্যার্তদের সাহায্যে ভারতীয় ত্রাণের ২য় চালান  

প্রকাশের সময়: ১১:৩৩:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

এই চালানে ২১.৫ টন প্রয়োজনীয় সামগ্রী নেপালগুঞ্জে পাঠানো হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে হাইজিন সামগ্রী, ওষুধ, মশারি, লাইফ জ্যাকেট, ঘুমানোর ম্যাট, খাদ্যসামগ্রী, গামবুট, একটি ফোলানো রাবারের নৌকা এবং একটি মোটর। কাঠমাণ্ডুর ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হবে যাতে চলমান ত্রাণ কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা যায়।

গত মাসের শেষের দিকে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে নেপালে ২৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকা এখনও জলে ডুবে আছে এবং হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে, যারা দ্রুত পুনর্বাসনের জন্য সহায়তা প্রয়োজন।

ভারতীয় দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “নেপালের সরকারের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে, যাতে বন্যার শিকারদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দ্রুত পৌঁছানো যায়। আরও ত্রাণ সামগ্রী শীঘ্রই পৌঁছাবে, যা নেপালের প্রতি আমাদের অব্যাহত সংহতির প্রতীক।”

দ্বিতীয় চালানের বিস্তারিত

আজকের চালানটি ভারতের পাঠানো দ্বিতীয় ত্রাণ সহায়তা, যা এই সপ্তাহের শুরুর একটি প্রথম চালানের পর পাঠানো হয়েছে। এই চালানে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী রয়েছে, যা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী চাহিদা মেটানোর জন্য নকশা করা হয়েছে:

হাইজিন সামগ্রী: যেমন সাবান, জীবাণুনাশক, ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত সামগ্রী, যাতে বন্যা-পরবর্তী রোগের বিস্তার রোধ করা যায়।

ওষুধ: প্রয়োজনীয় ওষুধ, যা আঘাত ও পানিবাহিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।

মশারি ও লাইফ জ্যাকেট: ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পানিবাহিত দুর্ঘটনা ও মশার কামড় থেকে রক্ষা করার জন্য।

ঘুমানোর ম্যাট ও খাদ্যসামগ্রী: গৃহহারা মানুষদের তাৎক্ষণিক আরাম ও খাদ্যের জোগান দিতে।

ফোলানো রাবারের নৌকা ও মোটর: উদ্ধার কাজ ও দুর্গম এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে ব্যবহৃত হবে।

ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, এই ত্রাণ সামগ্রী বন্যাদুর্গতদের প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে নির্বাচিত হয়েছে, যাতে তাৎক্ষণিক বেঁচে থাকার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের কাজও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায়।

এর আগে সপ্তাহের শুরুতে, ভারতীয় দূতাবাস ১১.৮৫ মিলিয়ন রুপি মূল্যের প্রথম ত্রাণ সামগ্রী ব্যাংকের প্রধান জেলা কর্মকর্তা খগেন্দ্র প্রসাদ রিজালের কাছে হস্তান্তর করে। সেই চালানে ৪.২ টন ত্রাণ সামগ্রী ছিল, যার মধ্যে ছিল ত্রিপল, ঘুমানোর ব্যাগ, কম্বল, ক্লোরিন ট্যাবলেট, ও বোতলজাত পানি।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাস জানিয়েছে, “আমরা নেপালের কর্তৃপক্ষের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি, যাতে সব প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা যায়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও ত্রাণ সামগ্রী যেমন স্বাস্থ্যবিধি ও ওষুধ পাঠানো হবে, যাতে নেপালের পুনরুদ্ধার কাজকে আরও সহায়তা করা যায়।”

ভারত সরকার নেপালের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখে ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো যায়। ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা নেপালের এই কঠিন সময়ে অব্যাহত সমর্থন ও সম্পদ দিয়ে পাশে থাকবে।

ভারত ও নেপালের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যা সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক বন্ধনে আবদ্ধ। নেপালে ত্রাণ পাঠানোর মাধ্যমে ভারত এই সম্পর্কের গভীরতা প্রকাশ করেছে, যা দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহানুভূতির প্রতীক।

ভারতের এই সহায়তা আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে এবং ত্রাণ সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করে তুলবে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক