২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। পুনরায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নির্মলা সীতারমন। তৃতীয় বারের জন্য অর্থমন্ত্রীর পদে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর মঙ্গলবার ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের সম্পূর্ণ বাজেট পেশ করেছেন তিনি। বাজেটে অর্থমন্ত্রীর তরফে একাধিক বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।
২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশ হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্র। এই ‘বিকশিত ভারত’ গড়ে তোলার লক্ষ্য প্রসঙ্গে বাজেটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। একটি সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার সময় নির্মলা সীতারমন জানিয়েছেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে মোদি সরকার আগামী পাঁচ বছরে মোট নয়টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে চলেছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে, এই অগ্রাধিকারগুলি দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং ধারাবাহিক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতির দিকে ইঙ্গিত করছে। ভারত ও ভারতীয়দের পর্যাপ্ত উন্নতির জন্য মোট নয়টি বিষয়কে অগ্রাধিকার প্রদান করার লক্ষ্য নিয়েছে কেন্দ্র। এই অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলি রইল নিম্নলিখিত-
১. কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা: এই ক্ষেত্রে দেশের কৃষি খাতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু সহনশীল শস্য উৎপাদনের উপর বাড়তি গুরুত্ব প্রদান করা হবে। প্রাকৃতিক চাষের উপর জোর দেওয়া হতে চলেছে। আগামী দুই বছরে 2 কোটি কৃষককে শংসাপত্রের মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। তৈলবীজের উৎপাদন বৃদ্ধি করার উপরেও বিশেষভাবে নজর দিতে চলেছে কেন্দ্র।
২. কর্মসংস্থান ও দক্ষতা: কর্মসংস্থানের উপর আগামী বছরগুলিতে বাড়তি গুরুত্ব দেবে কেন্দ্র। ফার্স্ট টাইমার্স স্কিমের অধীনে সরকার সমস্ত ফর্মাল সেক্টরে নতুন চাকরিতে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের একটি ০১ মাসের মজুরি সংক্রান্ত সুবিধা প্রদান করবে। তিনটি কিস্তিতে এই সুবিধা দেওয়া হবে। কর্মীদের ১৫ হাজার রুপি পর্যন্ত সুবিধা সরাসরি স্থানান্তর করা হতে চলেছে। মাসে ০১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যারা বেতন পান তাঁরা এই সুবিধা পাবেন। স্কিমটি থেকে ২.১ কোটি যুবক যুবতী উপকৃত হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৩. মানবসম্পদ উন্নয়ন: এই বিভাগটির অধীনে পিএম বিশ্বকর্মা, স্বনিধি ও এনআরএলএম রয়েছে। এছাড়াও পূর্বদয় নামক প্রকল্পের অধীনে দেশে পূর্বাঞ্চলের জন্য সর্বাত্মক উন্নয়নের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। এই সবকটি প্রকল্পই মানবসম্পদ উন্নয়নকে কভার করবে।
৪. সামাজিক ন্যায়: সমাজের মধ্যে সম্পদ ও সুযোগ সুবিধা বন্টনের ক্ষেত্রে বাড়তি নজর দেওয়া হতে চলেছে যাতে প্রতিটি ব্যক্তির অধিকার স্বীকৃত ও সুরক্ষিত থাকে।
৫. নগর উন্নয়ন: নগর উন্নয়নের উপর আগামীতেও বাড়তি গুরুত্ব প্রদান করা অব্যাহত রাখবে কেন্দ্র।
৬. শক্তির দক্ষতা: শক্তির দক্ষতা বা এনার্জি এফিসিয়েন্সির উপর বিশেষভাবে নজর দেওয়া হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই শক্তি খাতের উন্নয়নের উপর বাড়তি গুরুত্ব প্রদান করছে কেন্দ্র।
৭. পরিকাঠামো: কেন্দ্রীয় সরকার পরিকাঠামোর উপর সর্বদা বাড়তি গুরুত্ব প্রদান করে এসেছে। আগামীতেও পরিকাঠামোর উন্নয়নে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হতে চলেছে।
৮. উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়ন: উন্নয়নের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও গবেষণার উপর বাড়তি গুরুত্ব প্রদান করতে চলেছে কেন্দ্র।
৯. পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কার: পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কারের ক্ষেত্রেও দেওয়া হবে বিশেষ নজর।
প্রসঙ্গত, এই নয়টি অগ্রাধিকারের বিষয়গুলির প্রসঙ্গে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। স্পষ্টভাবেই এই প্রত্যেকটি বিষয়কে ঘিরে আগামী দিনের জন্য একাধিক পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক