ময়মনসিংহ ০৭:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচ্ছিন্ন বর্তমানের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ অতীত ভাল

ময়মনসিংহ: “অতীতের চেয়ে ভাল” বলে বর্তমানের ত্রুটি অস্বীকার করার প্রবণতা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতোই। সবাই খোলা চোখে দেখছে উলঙ্গ দেহ, অথচ পাগলের সুখ মনে মনে কাপড় পড়ে আছে ভেবে। এ এক ভয়ানক মানসিক রোগ।

সংসার, সমাজ ও রাষ্ট্র- সর্বত্রই অতীতের চেয়ে অর্থবিত্ত হয়তো বেশি হয়েছে, দুর্ভিক্ষের আকালের দিন হয়তো আর নেই, শিক্ষার অধিকার হয়তো অধিকতর হয়েছে, যোগাযোগের ক্ষেত্রে গতি বেড়েছে, এই সবকিছুকেই আমরা বাস্তবিক প্রগতি হিসেবে ধরে নিলাম। গ্রাফ আর গ্রাফিতির এই যুগে ঝকঝকে উপস্থাপনায় চোখ জুড়িয়ে যায়।

এবার অতীতের কথা বলুন। সংসারের ক্ষেত্রে যে একান্নবর্তী পরিবারের মধুর অতীত আমাদের ছিল, সেটি এখন কোথায়? সমাজের যে ইস্পাতসম ঐক্য আমাদের ছিলো, সেটিই বা কোথায়? লুঙ্গি পড়া, খালি গায়ের গুটিকতক তরুণ যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অস্ত্রের মুখে জীবন বিসর্জন দিয়ে দুইশো বছরের দাসত্ব থেকে আমাদের মুক্ত করে গেলেন, সেই তারুণ্যের তেজ আজ কোথায়?

আমি তো বরং অতীতের দিকেই ফিরে যেতে আগ্রহী। সেই অতীত- যে অতীতে কোলাহল কম, অনুভব বেশি। যে অতীতে ভোগের বাসনা অনুপস্থিত, ত্যাগের ক্ষুধা প্রবল। যে অতীতে আমার একটু কম হলেও মানি, আমার ভাইয়ের যেন প্রাপ্য পূরণ হয়, এই মানসিকতাই প্রধান।

কোন বর্তমান নিয়ে আপনারা গৌরব করেন? কংক্রিটের স্তূপ তো বহু প্রাচীন নগরীতেও ছিলো, সেগুলো মাটির নীচে চাপা পড়েছিল কেন? কারণ বস্তুগত প্রবৃদ্ধি কখনোই টেকসই প্রগতির নিয়ামক নয়; বরং মানবিক মনুষ্যসমাজই প্রগতির ধারক।

আজকের বর্তমানে পরিবার থেকে রাষ্ট্র- সর্বত্রই ভ্রাতৃঘাতী অন্তর্কলহ। সর্বত্রই অমেরুদণ্ডী তোষামোদের জয়জয়কার। সহজ কথা সোজাভাবে বলাটাই এখন মহাপাপ। যার যা দায়িত্ব, সেটা ভুলে সবারই এক উদ্দেশ্য- আরো চাই। আরো চাই। ছিঃ লজ্জা! লজ্জা!

বিচ্ছিন্ন বর্তমানের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ অতীত ভাল। আসুন, লজ্জা ভুলে গৌরবের অতীতে ফিরি। অতীতের গৌরবকে ফিরিয়ে আনি বর্তমানে।

লেখক: উদ্যোক্তা ও সংগঠক

বিচ্ছিন্ন বর্তমানের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ অতীত ভাল

প্রকাশের সময়: ০১:০৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

ময়মনসিংহ: “অতীতের চেয়ে ভাল” বলে বর্তমানের ত্রুটি অস্বীকার করার প্রবণতা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতোই। সবাই খোলা চোখে দেখছে উলঙ্গ দেহ, অথচ পাগলের সুখ মনে মনে কাপড় পড়ে আছে ভেবে। এ এক ভয়ানক মানসিক রোগ।

সংসার, সমাজ ও রাষ্ট্র- সর্বত্রই অতীতের চেয়ে অর্থবিত্ত হয়তো বেশি হয়েছে, দুর্ভিক্ষের আকালের দিন হয়তো আর নেই, শিক্ষার অধিকার হয়তো অধিকতর হয়েছে, যোগাযোগের ক্ষেত্রে গতি বেড়েছে, এই সবকিছুকেই আমরা বাস্তবিক প্রগতি হিসেবে ধরে নিলাম। গ্রাফ আর গ্রাফিতির এই যুগে ঝকঝকে উপস্থাপনায় চোখ জুড়িয়ে যায়।

এবার অতীতের কথা বলুন। সংসারের ক্ষেত্রে যে একান্নবর্তী পরিবারের মধুর অতীত আমাদের ছিল, সেটি এখন কোথায়? সমাজের যে ইস্পাতসম ঐক্য আমাদের ছিলো, সেটিই বা কোথায়? লুঙ্গি পড়া, খালি গায়ের গুটিকতক তরুণ যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অস্ত্রের মুখে জীবন বিসর্জন দিয়ে দুইশো বছরের দাসত্ব থেকে আমাদের মুক্ত করে গেলেন, সেই তারুণ্যের তেজ আজ কোথায়?

আমি তো বরং অতীতের দিকেই ফিরে যেতে আগ্রহী। সেই অতীত- যে অতীতে কোলাহল কম, অনুভব বেশি। যে অতীতে ভোগের বাসনা অনুপস্থিত, ত্যাগের ক্ষুধা প্রবল। যে অতীতে আমার একটু কম হলেও মানি, আমার ভাইয়ের যেন প্রাপ্য পূরণ হয়, এই মানসিকতাই প্রধান।

কোন বর্তমান নিয়ে আপনারা গৌরব করেন? কংক্রিটের স্তূপ তো বহু প্রাচীন নগরীতেও ছিলো, সেগুলো মাটির নীচে চাপা পড়েছিল কেন? কারণ বস্তুগত প্রবৃদ্ধি কখনোই টেকসই প্রগতির নিয়ামক নয়; বরং মানবিক মনুষ্যসমাজই প্রগতির ধারক।

আজকের বর্তমানে পরিবার থেকে রাষ্ট্র- সর্বত্রই ভ্রাতৃঘাতী অন্তর্কলহ। সর্বত্রই অমেরুদণ্ডী তোষামোদের জয়জয়কার। সহজ কথা সোজাভাবে বলাটাই এখন মহাপাপ। যার যা দায়িত্ব, সেটা ভুলে সবারই এক উদ্দেশ্য- আরো চাই। আরো চাই। ছিঃ লজ্জা! লজ্জা!

বিচ্ছিন্ন বর্তমানের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ অতীত ভাল। আসুন, লজ্জা ভুলে গৌরবের অতীতে ফিরি। অতীতের গৌরবকে ফিরিয়ে আনি বর্তমানে।

লেখক: উদ্যোক্তা ও সংগঠক