ময়মনসিংহ ১১:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্থানীয় প্রশাসন নৌকাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়েছে : সাবেক হুইপ আতিক

ছবি: প্রতিদিনের ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ: নির্বাচনের দু’সপ্তাহ পর শেরপুর-১ (সদর) আসনে প্রশাসনের ‘পক্ষপাতিত্ব’ ও ‘ফ্রিস্টাইল অনিয়মের’ বিষয়ে মুখ খুলেছেন বিদায়ী সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় সভাপতির বক্তব্যে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের বিষয়ে অভিযোগ তুলে বলেন, এ আসন নৌকার ঘাঁটি। ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ এর নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিবারই নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। এবার স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সরাসরি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করে পশ্চিমাঞ্চলে ফ্রিস্টাইলে ভোট কাস্টের সুযোগ দিয়ে বিশেষ মিশন নিয়ে পূর্বাঞ্চলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা নৌকার নেতা-কর্মীদের চাপে রেখে তাদের সাথে রূঢ় আচরণ করেছেন। নৌকার কোন অভিযোগে পাত্তা দেননি।

তিনি বলেন, নৌকা হারেনি, নৌকাকে স্থানীয় প্রশাসন ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে পরিকল্পিতভাবে হারিয়েছে। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাঁধে ভর করা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রায় প্রতিটি এলাকায় তাণ্ডব শুরু করলেও তারা নীরবতা পালন করছেন। তাই তিনি শেরপুরকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দ্রুত প্রত্যাহার দাবি করেন। তিনি সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি স্থগিত কেন্দ্রের ফলাফল ব্যতীত ১৪৩ কেন্দ্রের ফলাফল উদ্বৃত করে বলেন, ১১৫ কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদানের হার দাঁড়িয়েছে ৪৮ ভাগ। এর মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৯২ হাজার ৩৪৫ ভোট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীক পেয়েছে ৬৩ হাজার ৯৩৮ ভোট। অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত ২৮টি কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার দাঁড়িয়েছে ৮৬ ভাগ। যার মধ্যে ট্রাক পেয়েছে ৭২ হাজার ৫৪৮ ভোট। আর নৌকা পেয়েছে ১ হাজার ২৭ ভোট। এছাড়া একাধিক কেন্দ্রে ০ ভোট ও একাধিক কেন্দ্রে ১ ও ২ ভোট দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ওই কাজটি হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

তিনি তৃণমূলের নেতাদের হামলা-মামলা ও হুমকির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনোত্তর সহিংসতা শেরপুরে কখনও হয়নি। ২০০১ এর নির্বাচনেও না। এবার হচ্ছে। সেইসাথে চলছে চাঁদাবাজি। এটাই তাদের বিজয়লাভের শিষ্টাচার। তিনি বলেন, দায়িত্বের ২৫ বছর কখনও ঘুষ খাইনি। তাই ঘুষ না দেওয়ায় বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে। শেরপুরের মানুষ প্রশাসনের বিচার চাচ্ছে। তিনি নেতা-কর্মীদের ধৈর্র্য্য ধারণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আজ থেকে অত্যাচার-নির্যাতন, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে রাস্তাঘাট অচল করে দিতে হবে।

মূল্যায়ন সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, সাবেক সহ-সভাপতি, নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান বাচ্চু, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভেকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক ধর্ম সম্পাদক আলহাজ্ব মো. দুলাল উদ্দিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোয়েব হাসান শাকিলসহ ১৪ ইউনিয়নের প্রতিনিধিগণ। বক্তাদের প্রায় সবাই নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের দ্বারা বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্যাতন, হামলা-মামলা, হুমকি-ধামকি, বাড়ি ছাড়া, দলীয় অফিস ও ক্লাব বেদখলসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে দ্রুত তার নিরসন দাবি করেন।

স্থানীয় প্রশাসন নৌকাকে পরিকল্পিতভাবে হারিয়েছে : সাবেক হুইপ আতিক

প্রকাশের সময়: ০৫:১৯:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪

ময়মনসিংহ: নির্বাচনের দু’সপ্তাহ পর শেরপুর-১ (সদর) আসনে প্রশাসনের ‘পক্ষপাতিত্ব’ ও ‘ফ্রিস্টাইল অনিয়মের’ বিষয়ে মুখ খুলেছেন বিদায়ী সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক।

শনিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের উৎসব কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভায় সভাপতির বক্তব্যে সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের বিষয়ে অভিযোগ তুলে বলেন, এ আসন নৌকার ঘাঁটি। ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ এর নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিবারই নৌকা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছে। এবার স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা উপেক্ষা করে সরাসরি স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করে পশ্চিমাঞ্চলে ফ্রিস্টাইলে ভোট কাস্টের সুযোগ দিয়ে বিশেষ মিশন নিয়ে পূর্বাঞ্চলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তারা নৌকার নেতা-কর্মীদের চাপে রেখে তাদের সাথে রূঢ় আচরণ করেছেন। নৌকার কোন অভিযোগে পাত্তা দেননি।

তিনি বলেন, নৌকা হারেনি, নৌকাকে স্থানীয় প্রশাসন ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে পরিকল্পিতভাবে হারিয়েছে। এখন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাঁধে ভর করা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রায় প্রতিটি এলাকায় তাণ্ডব শুরু করলেও তারা নীরবতা পালন করছেন। তাই তিনি শেরপুরকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের দ্রুত প্রত্যাহার দাবি করেন। তিনি সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি স্থগিত কেন্দ্রের ফলাফল ব্যতীত ১৪৩ কেন্দ্রের ফলাফল উদ্বৃত করে বলেন, ১১৫ কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট প্রদানের হার দাঁড়িয়েছে ৪৮ ভাগ। এর মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৯২ হাজার ৩৪৫ ভোট। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীক পেয়েছে ৬৩ হাজার ৯৩৮ ভোট। অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত ২৮টি কেন্দ্রে ভোট প্রদানের হার দাঁড়িয়েছে ৮৬ ভাগ। যার মধ্যে ট্রাক পেয়েছে ৭২ হাজার ৫৪৮ ভোট। আর নৌকা পেয়েছে ১ হাজার ২৭ ভোট। এছাড়া একাধিক কেন্দ্রে ০ ভোট ও একাধিক কেন্দ্রে ১ ও ২ ভোট দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ওই কাজটি হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তারা ব্যর্থ হয়েছে। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

তিনি তৃণমূলের নেতাদের হামলা-মামলা ও হুমকির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনোত্তর সহিংসতা শেরপুরে কখনও হয়নি। ২০০১ এর নির্বাচনেও না। এবার হচ্ছে। সেইসাথে চলছে চাঁদাবাজি। এটাই তাদের বিজয়লাভের শিষ্টাচার। তিনি বলেন, দায়িত্বের ২৫ বছর কখনও ঘুষ খাইনি। তাই ঘুষ না দেওয়ায় বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদছে। শেরপুরের মানুষ প্রশাসনের বিচার চাচ্ছে। তিনি নেতা-কর্মীদের ধৈর্র্য্য ধারণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আজ থেকে অত্যাচার-নির্যাতন, চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে রাস্তাঘাট অচল করে দিতে হবে।

মূল্যায়ন সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি, সাবেক সহ-সভাপতি, নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান বাচ্চু, সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভেকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক ধর্ম সম্পাদক আলহাজ্ব মো. দুলাল উদ্দিন, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওলাদুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোয়েব হাসান শাকিলসহ ১৪ ইউনিয়নের প্রতিনিধিগণ। বক্তাদের প্রায় সবাই নির্বাচনে প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের দ্বারা বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্যাতন, হামলা-মামলা, হুমকি-ধামকি, বাড়ি ছাড়া, দলীয় অফিস ও ক্লাব বেদখলসহ নানা অভিযোগ তুলে ধরে দ্রুত তার নিরসন দাবি করেন।