ময়মনসিংহ: জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার চরসাতারিয়া এলাকার বাবুল ওরফে হারুন। পুলিশের পোশাক পরে দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রতারণা করে আসছিলেন। সম্প্রতি পুলিশের পোশাকে প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ।
পুলিশ বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন বাবুল ওরফে হারুন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আশরাফ হোসেন এ তথ্য জানান।
ডিসি আশরাফ বলেন, ‘গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে চিকিৎসককে দেখিয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন সম্পর্কে জানতে পুলিশের পোশাক পরা হারুন নামে এক ব্যক্তির কাছে সহযোগিতা চান নরসিংদীর হেলেনা বেগম। ওই ব্যক্তি তাকে সহযোগিতা করেন। এসময় হেলেনার মোবাইল নম্বর রেখে দেন। এমন কি পরের দিন আবারও ডাক্তার দেখাতে আসবেন- এই তথ্যও জেনে নেন। পরের দিন হারুন হেলেনাকে ফোন করে ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে আসার তথ্য নিশ্চিত হন। পরবর্তীতে ১৩ তারিখ হেলেনা ও তার বান্ধবী রিনা বেগম ডাক্তার দেখাতে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে আসেন। এসময় হাসপাতালের সামনে এসে হারুনকে দেখতে পান তারা। পরে হারুন হাসপাতালের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে হেলেনাকে ডাক্তার দেখাতে সহযোগিতা করেন। এসময় রিনা ও পুলিশের পোশাক পরিহিত হারুন বাইরে অপেক্ষা করেন। এর মধ্যে রিনা হাতের ব্যাগ রেখে টয়লেটে যান। ফিরে এসে দেখেন হারুন নেই। রেখে যাওয়া ব্যাগে নগদ ২৭ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিল। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও হারুনকে না পেয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী হেলেনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোমবার ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে নেমে রাজধানীর বিমানবন্দরের গোলচত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তদন্তে ধানমন্ডি থানা পুলিশ জানতে পারে, হারুন ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত বলে পরিচয় দেন। পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে হারুন শিউলি বেগম নামে এক নারীর সঙ্গে এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক করে প্রায় দুই মাস আগে বিয়ে করেন।
হারুন পুলিশ পরিচয় ও পোশাক পরা অবস্থায় ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় আরও অনেক ধরনের অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী পরিচয়ে প্রতারণার’ অভিযোগে তিনটি মামলা এবং বিভিন্ন অপরাধে দেশের বিভিন্ন থানায় মামলার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।