ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ বিভাগে তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে সন্ধ্যার পর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। 

রাত থেকে ভোর পর্যন্ত বিরাজ করে এ অবস্থা। এছাড়া সকাল থেকে সারাদিন সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষ।

ধানের জমি চাষ করা হলেও তীব্র শীতে চারা রোপণ করতে পারছেন না কৃষকরা। ময়মনসিংহে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।। 

ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে গ্রামাঞ্চলের খেটেখাওয়া মানুষ, দিনমজুর ও মাঠে চাষাবাদ করা মানুষের দিন কাটছে কষ্টে। এছাড়া ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহন চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। মধ্য জানুয়ারিতে জেঁকে বসেছে এমন শীত। কনকনে ঠাণ্ডা আর হিমেল বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশা পড়ায় দুর্ভোগের শেষ নেই মানুষের।  

জানা গেছে, গত কয়েক দিন ধরেই ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলায় তীব্র শীত ও ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। গত চার দিন ধরে অধিকাংশ সময়ই আকাশ থাকছে মেঘাচ্ছন্ন। একই সঙ্গে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ঝিঁরিঝিঁরি বৃষ্টির মতো পড়ছে। মাঝে মধ্যে সূর্য উঁকি দিলেও অধিকাংশ সময়েই থাকছে মেঘের আড়ালে। 

ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় শীতে সাধারণ মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছেন। কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যের আলোর উত্তাপ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কমছে না শীতের তীব্রতা। শীত থেকে রক্ষা পেতে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

শেরপুরের নকলা উপজেলার কৃষক রহমত সিকদার জানান, শীতের তীব্রতায় মাঠে কাজ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পর ঠাণ্ডার দাপটে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।

নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের দিনমজুর সিদ্দিক আলী জানান, সকাল-সন্ধ্যা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে হচ্ছে। হতদরিদ্র লোকজনের অবস্থা চরম শোচনীয় হয়ে পড়েছে।

জামালপুরের ইসলামপুরের কৃষক সফর মিয়া বলেন, ধানের জমিতে চাষ করা হলেও ঠাণ্ডায় ধানের চারা রোপণ করা যাচ্ছে না।

ময়মনসিংহের ভালুকার পোশাক শ্রমিক ইয়াকুব জানান, তীব্র শীতে মেস থেকে বেরিয়ে অফিসে যেতে কষ্ট হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ বিভাগে শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবারের তাপমাত্রা ফের নেমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন অবস্থা আরও দীর্ঘ হতে পারে।