ময়মনসিংহ ১১:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ময়মনসিংহের ইতিহাস

মোগল যুগের সাধক মোমেনশাহের নামে ‘ময়মনসিংহ’

ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ: শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সূতিকাগার বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিস্তীর্ণ জনপদ। এর ভৌগলিক পরিবেশ বিচিত্র হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষের সামাজিক জীবন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, জীবিকা ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রবাদ আছে— ‘হাওর, জঙ্গল, মহীষের শিং; এ নিয়ে ময়মনসিং’।

মহুয়া-মলুয়ার দেশ ময়মনসিংহের পূর্ব নাম ছিল নাসিরাবাদ। ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাঁর ছেলে সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহের জন্য এই অঞ্চলে একটি নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই থেকে নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি। মোগল আমলে মোমেনশাহ নামে একজন সাধক ছিলেন, তাঁর নামেই মধ্যযুগে অঞ্চলটির নাম হয় মোমেনশাহী। কালের বিবর্তনে এটি ‘ময়মনসিংহ’ নামে পরিচিতি পায়।

ময়মনসিংহ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন অনেক ছবি এঁকেছিলেন। এখানকার বহু স্থাপনায় প্রাচীন নির্মাণশৈলীর ছোঁয়া রয়েছে। কালের সাক্ষীস্বরূপ ভগ্ন জমিদার বাড়িও আছে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি জড়িয়ে আছে ত্রিশাল উপজেলায়। মহুয়া মলুয়া থেকে শুরু করে জয়নুল আবেদীনের চিত্রকর্ম হয়ে উঠেছে বিশ্বময় ময়মনসিংহের গৌরবগাঁথা। ঈশা খাঁর যুদ্ধ বা সখিনা-সোনাভানের কাহিনী বাতাসে ছড়ায় বীরত্বের হৃদয়ছোঁয়া বিরলপ্রভা। 

বৃহত্তর ময়মনসিংহের লোকসংস্কৃতি রূপান্তরিত হয়েছে ঐতিহ্যে। ময়মনসিংহ গীতিকা বিশ্ব দরবারে অলঙ্কৃত করেছে ময়মনসিংহের নিজস্ব পরিচয়। স্বপ্নের নকশীকাঁথায় বোনা হয়েছে এখানকার বাস্তবচিত্রের কাহিনী।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের লীলাভূমি ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো শহীদ আব্দুল জব্বার জাদুঘর, শশী লজ, গৌরীপুর হাউজ, রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ওয়ার্কস, ময়মনসিংহ টাউন হল, কালুশাহ বা কালশার দীঘি, মহারাজ সূর্যকান্তের বাড়ি, চীনা মাটির টিলা, রাবার ডেম, গারো পাহাড়, অর্কিড বাগান, আলাদিনস পার্ক, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যান, স্বাধীনতা স্তম্ভ, মিনি চিড়িয়াখানা, আনন্দ মোহন কলেজ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

বিষয়:

ময়মনসিংহের ইতিহাস

মোগল যুগের সাধক মোমেনশাহের নামে ‘ময়মনসিংহ’

প্রকাশের সময়: ১২:৫০:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩

ময়মনসিংহ: শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সূতিকাগার বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিস্তীর্ণ জনপদ। এর ভৌগলিক পরিবেশ বিচিত্র হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষের সামাজিক জীবন, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, জীবিকা ও সংস্কৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ। প্রবাদ আছে— ‘হাওর, জঙ্গল, মহীষের শিং; এ নিয়ে ময়মনসিং’।

মহুয়া-মলুয়ার দেশ ময়মনসিংহের পূর্ব নাম ছিল নাসিরাবাদ। ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাঁর ছেলে সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহের জন্য এই অঞ্চলে একটি নতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই থেকে নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি। মোগল আমলে মোমেনশাহ নামে একজন সাধক ছিলেন, তাঁর নামেই মধ্যযুগে অঞ্চলটির নাম হয় মোমেনশাহী। কালের বিবর্তনে এটি ‘ময়মনসিংহ’ নামে পরিচিতি পায়।

ময়মনসিংহ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন অনেক ছবি এঁকেছিলেন। এখানকার বহু স্থাপনায় প্রাচীন নির্মাণশৈলীর ছোঁয়া রয়েছে। কালের সাক্ষীস্বরূপ ভগ্ন জমিদার বাড়িও আছে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি জড়িয়ে আছে ত্রিশাল উপজেলায়। মহুয়া মলুয়া থেকে শুরু করে জয়নুল আবেদীনের চিত্রকর্ম হয়ে উঠেছে বিশ্বময় ময়মনসিংহের গৌরবগাঁথা। ঈশা খাঁর যুদ্ধ বা সখিনা-সোনাভানের কাহিনী বাতাসে ছড়ায় বীরত্বের হৃদয়ছোঁয়া বিরলপ্রভা। 

বৃহত্তর ময়মনসিংহের লোকসংস্কৃতি রূপান্তরিত হয়েছে ঐতিহ্যে। ময়মনসিংহ গীতিকা বিশ্ব দরবারে অলঙ্কৃত করেছে ময়মনসিংহের নিজস্ব পরিচয়। স্বপ্নের নকশীকাঁথায় বোনা হয়েছে এখানকার বাস্তবচিত্রের কাহিনী।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র্যের লীলাভূমি ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থানগুলো হলো শহীদ আব্দুল জব্বার জাদুঘর, শশী লজ, গৌরীপুর হাউজ, রাজ রাজেশ্বরী ওয়াটার ওয়ার্কস, ময়মনসিংহ টাউন হল, কালুশাহ বা কালশার দীঘি, মহারাজ সূর্যকান্তের বাড়ি, চীনা মাটির টিলা, রাবার ডেম, গারো পাহাড়, অর্কিড বাগান, আলাদিনস পার্ক, আলেকজান্ডার ক্যাসেল, শিল্পাচার্য জয়নুল উদ্যান, স্বাধীনতা স্তম্ভ, মিনি চিড়িয়াখানা, আনন্দ মোহন কলেজ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।