ময়মনসিংহ: প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে মাঠে নেমেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন নেত্রকোণা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনের কেন্দুয়া উপজেলার নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা। এ নিয়ে দু’পক্ষের লোকজন স্থানীয় কেন্দুয়া থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলাও করেছেন। এরমধ্যে একটি মামলায় নৌকার সমর্থক খোকন মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, নেত্রকোণা-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। এখানে নৌকার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে ট্রাক প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মঞ্জুর কাদের কোরাইশী (ঈগল), জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূইয়া (লাঙ্গল), ইসলামি ঐক্য জোটের এহতেশাম সারওয়ার (মিনার) ও তৃণমূল বিএনপির মিজানুর রহমান (সোনালী আঁশ)।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দের দিন গত সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের বাজারে প্রচারণা চালানোর সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টুর সমর্থকদের ওপর হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগে পরদিন গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) নৌকার সমর্থক মাসকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুছ ছালাম বাঙ্গালীসহ ১৯ জনের নামোল্লেখ করে ট্রাক প্রতীকের সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক আপেল মাহমুদ বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা করেন।
অপরদিকে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক চেতনা বিরোধী উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুরের অভিযোগে গত বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নৌকা প্রতীকের সমর্থক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম রবিউল বাদী হয়ে ট্রাক প্রতীকের সমর্থক আপেল মাহমুদসহ ২৯ জনকে আসামী করে পাল্টা একটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে আপেল মাহমুদের দায়েরকৃত মামলার সাত নম্বর আসামী নৌকার সমর্থক মাসকা ইউনিয়নের ডুপিচান্দালী গ্রামের বাসিন্দা সুলতান মিয়ার ছেলে খোকন মিয়াকে গত বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘খোকন মিয়াকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুই মামলার আসামীদেরকেই গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
এ বিষয়ে কথা হলে দুটি মামলার বাদীই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেন। প্রথম মামলার বাদী আপেল মাহমুদ বলেন, ‘প্রতীক বরাদ্দের দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে মাসকা বাজারে ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে আলোচনা করছিলাম। এ সময় নৌকার প্রার্থীর সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান ছালাম বাঙ্গালীর নির্দেশে তাদের লোকজন আমাদের অফিসসহ লোকজনের ওপর হামলা করে। এ সময় তারা আমাদের ৫টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে এবং এতে আমিসহ আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হই।’
দ্বিতীয় মামলাটির বাদী শফিউল আলম রবিউল বলেন, ‘ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে আমরা নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে মতবিনিময় করছিলাম। এ সময় ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে সা¤প্রদায়িক চেতনা বিরোধী উস্কানিমূলক শ্লোগান দিয়ে আমাদের অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এতে আমাদের ৪ জন কর্মী আহত হন।’